২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

EN

সম্পত্তি দখল করতে সৎ সন্তানদের অত্যাচারে সন্তান নিয়ে ঘর ছাড়া বৃদ্ধা

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৯:২৬ অপরাহ্ণ , ৩০ জুন ২০২১, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে

মোঃনিয়ামুল আকন্ঞ্জি, স্টাফ রিপোর্টার: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকার আব্দুল ওহেদের প্রথম স্ত্রীর সন্তাদের বিরুদ্ধে ২য় স্ত্রীর সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

সম্পদের দাবি করলে উল্টো মারধর করা হয় ৬০বছরের বৃদ্ধা আমেনা বেগমকে। তাদের পক্ষ নিয়ে বৃদ্ধা বয়সে আমেনা বেগমকে তালাক দিয়েছে স্বামী আব্দুল ওহেদ। এই ঘটনায় বিভিন্ন সাহেব সর্দারদের কাছে ধর্ণা দিও কোন ফলাফল পায়নি ভুক্তভোগীরা।

শেষ পর্যন্ত দারস্থ হয়েছেন আদালতের। গত ২৬ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ আদালতে ওহেদের দ্বিতীয় স্ত্রী আমেনা বেগম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করতে সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দেন।

মামলার আসামী করা হয় আমেনা বেগমের স্বামী আব্দুল ওহেদ, আব্দুল ওহেদের প্রথম স্ত্রীর ছেলে ওসমান গণী, সিদ্দিকুর রহমান ও মেয়ে কুলসুম বেগমকে।

এ ব্যাপারে আমেনা বেগমের বড় ছেলে মো. ইদ্রিস আলী জানান, বিগত ২০০৮ সালে তার ছোটভাই রবিউল ইসলামকে পরিবারের হাল ধরতে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়৷ সে অবৈধ ভাবে মালয়েশিয়া প্রবাস জীবন কাটাচ্ছে। ওই সময় থেকে রবিউল যা ইনকাম করতেন তা তার আগের মায়ের ঘরের সৎভাই মো. ওসমান গণী ও বাবা আব্দুল ওহেদের কাছে পাঠাতেন।

রবিউল প্রবাস থেকে জানতেন দুই পরিবারের সবাই একসাথে বসবাস করছে। কিন্তু এক পর্যায়ে জায়গা সম্পত্তি আত্মসাত করার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে তার মা আমেনা বেগম ও তার ছেলেদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। তার পিতা আব্দুল ওহেদ মিয়ার প্রথম সংসারের ছেলে মো. ওসমান গণী ও সিদ্দিকুর রহমান এবং তার দ্বিতীয় মেয়ে কুলসুম বিভিন্ন ভাবে তাল-বাহানা করে ওহেদ মিয়ার সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করেন।

এ জায়গা সম্পত্তি নিয়ে তার বাবা ওহেদ মিয়ার প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষের ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। তুচ্ছ যেকোন বিষয় নিয়ে আমেনা বেগমকে মারধোর করতেন ওহেদ মিয়া, তার ছেলে ওসমান, সিদ্দিকুর রহমান ও মেয়ে কুলসুম। যে কারনে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী আমেনা বেগম ও তার ছেলেদের বাড়ি থেকে বের হতে বাধ্য হয়।

আমেনার ছোট ছেলে হাফেজ নুরুল্লাহ কান্না চোখে বলেন, তার বড় ভাই প্রবাসী রবিউল যায়গা কেনার জন্য তার পিতা ওহেদ মিয়া ও সৎভাই ওসমান গণীকে ধাপে ধাপে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা পাঠান। এসব টাকা দিয়ে শান্তিবাগে বসতবাড়ি সংলগ্ন ও পুকুরের অংশসহ ১২ শতাংশ যায়গা ক্রয় করেন ওসমান গণী। এসব বিষয়ে রবিউল জিজ্ঞেস করলে টাকা দিয়ে কি করলেন, তখন ওসমান গণী বলেন, আমাদের ৬ভাইয়ের জন্য কিছু যায়গা ক্রয় করেছি। আমরা সবাই একসাথে থাকবো।

কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বাবা ওহেদ মিয়াকে জিম্মি করে তাদের ৬ ভাইয়ের যত জায়গা-সম্পত্তি আছে সব ওসমান গণী ও সিদ্দিকুর রহমানের নামে রেজিস্ট্রি করে ফেলেন৷ তারা নিজেদের জায়গা বলে দাবি করেন। এ যায়গার অংশদারিত্ব কেউ না।

এসব বিষয় নিয়ে যখন প্রতিবাদ শুরু করেন ও এলাকার সর্দারদেরকে জানান, তখন তাদের পিতা ওহেদ মিয়াকে ভুলবাল বুঝিয়ে সম্পত্তি কিভাবে আত্মসাত করা যায় সেই পায়তারা শুরু করেন তারা। তারা এলাকার কারও কথা শুনেন না। দ্বিতীয় পক্ষের সবাই সম্পত্তির দাবি করায় তার বাবা ওহেদ মিয়াকে বাদি করে তাদের বিরুদ্ধে মারধোর ও চুরির মিথ্যে মামলা দায়ের করেন। ইদ্রিস আলী ও হাফেজ নুরুল্লাহকে হেফাজতে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠাবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে৷ তদন্ত শেষে আদালতে যথা সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

সর্বশেষ আমেনা বেগমসহ তার ছেলেমেয়ে সম্পত্তির দাবি নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউ সমাধান দিতে পারছেন না। এসব বিষয় নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর ঘটেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

আরও পড়ুন