পুলিশের প্রতি হতাশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে আইসিটি আইনে মামলাটি করবেন, মোকতাদির চৌধুরী
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ , ৩১ মে ২০২১, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
পুলিশ বিভাগে হতাশ প্রকাশ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া (সদর-বিজয়নগরের) সাংসদ র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের বিষয়ে নিজের দেয়া অভিযোগ প্রায় চার সপ্তাহেও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না হওয়ায় তিনি এ হতাশার কথা জানান। পাশাপাশি সাইবার ট্রাইব্যুনালে আইসিটি আইনে মামলাটি করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) নিজের ফেসবুক আইডি থেকে মোকতাদির চৌধুরী ইংরেজিতে দেয়া স্ট্যাটাসে যা লিখেছেন এর অর্থ দাঁড়ায়, ‘পুলিশ বিভাগের হতাশার পরে আমি সাইবার ট্রাইব্যুনালে আমার আইসিটি মামলাটি নথিভুক্ত করতে যাচ্ছি। প্রায় ২০ দিন আগে নথি জমা দিলেও তারা প্রমাণ পায়নি, যদিও হাজার হাজার লোক প্রত্যক্ষ করেছে। যা মজার এবং হাস্যকর। আমি এই ফলাফলটি আমার আগের পোস্টে ইংগিত দিয়েছিলাম। আরো দেখতে দিন কি ঘটে। আসুন দেখুন বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে কি না।
এদিকে ১ জুনের মধ্যে সংসদ সদস্যের দেয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে আল্টিমেটাম দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। সংগঠনটির সভাপতি মো. রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারন সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ আল্টিমেটাম দেন। স্ট্যাটাসে তারা উল্লেখ করেন, ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন। ১ জুন মামলাটি নথিভুক্ত না হলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার দাবিতে রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধ অনুষ্ঠিত হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ২ জনু থেকে লাগাতার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টানা তিনদিনের তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজত ইসলামের জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে গত ১ মে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ এনেছিলেন সংসদ সদস্য (এমপি) এবং এটিই ছিলো শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রথম কোনো লিখিত অভিযোগ। তবে এমপি’র দেয়া অভিযোগ চার তিন সপ্তাহের বেশি সময়েও সদর থানায় মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।
এ অবস্থায় ২৪ মের মধ্যে মামলা নিতে সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী ফেসবুক স্ট্যাটাসে সংশ্লিষ্টদেরকে আল্টিমেটাম দেন। তবে ওই সময়ের মধ্যেও মামলা নথিভুক্ত করেনি পুলিশ। যে কারণে এমপিকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ি মামলা কখন নথিভুক্ত হবে সেটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। কেননা, পুলিশ চাইছে সিআইডি’র মতামতের ওপর ভিত্তি করে মামলাটি নিতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিআইডি’র কোনো মতামত এসে পৌঁছায়নি।
প্রসঙ্গত, হেফাজতের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি মুবারক উল্লাহসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দশজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ দেন মোকতাদির চৌধুরী। তার পক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার মামুন অভিযোগটি জমা দেন।
এতে অভিযোগ করা হয়, স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালায় হেফাজত ইসলামের নেতাকর্মীরা। তারা সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও পরকিল্পনার অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র ও গান পাউডারসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তারা তাণ্ডবে উস্কানি দেয়।
তাণ্ডবের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর, সরাইল ও আশুগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি শতাধিক প্রতিষ্ঠান হামলা-ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। এ ঘটনায় নিহত হয় অন্তত ১৩ জন। ৫৬টি মামলায় পুলিশ প্রায় ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করলেও হেফাজতের চিহ্নিত নেতা রয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন
আপনার মন্তব্য লিখুন