সাংবাদিক হেনস্থ:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন-বিক্ষোভ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:৪৪ অপরাহ্ণ , ১৯ মে ২০২১, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে
মোঃনিয়ামুল আকন্ঞ্জি,স্টাফ রিপোর্টার: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘করোনা প্রতিরোধ করো, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রত্যাহার করো’, শ্লোগানে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে হেনস্থা,মামলা হয়রানির প্রতিবাদ এবং তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন, প্রতিবাদ- বিক্ষোভ কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে বিক্ষুদ্ধ সাংবাদিকরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকসহ,স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য অনুবিভাগ) কাজী জেবুন্নেছা বেগমের অপসারণ দাবি করেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব আয়োজিত মানববন্ধন, বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সমাবেশে প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পিযুষ কান্তি আচার্য, জেলা টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের আহবায়ক মঞ্জুরুল আলম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আরজু, দৈনিক সমকালের নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুন নূর ও সংগঠনের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহভাপতি আলামিন শাহীন। সঞ্চালনা করেন বাচিক শিল্পি ও সাংবাদিক মনির হোসেন। মানববন্ধন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সমাবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ, জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী, সরাইল প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ ও প্রথম আলোর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সদস্যরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে অনুসন্ধ্যানী সাংবাকিকতার পথিকৃৎ রোজিনা ইসলাম। তিনি করোনার এই মহামারির সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সকল অনিয়ম, দুর্নীতি, অবস্থাপনা নিয়ে একাধিক অনুসন্ধ্যানী প্রতিবেদন করেছেন। রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও প্রতিবেদন করেছেন। এতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজনের ব্যক্তিগত অনেক ক্ষতি হয়েছে। সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় আটকে রেখে রোজিনা ইসলামকে মানসিক, শারীরিক নির্যাতন ও হেনস্থা করেছেন। যা কোনোভাবেই
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করতে পারে। এক অতিরিক্ত সচিব কিসের বলে রোজিনা ইসলামের মতো এক অনুসন্ধ্যানী সাংবাদিককে গলা চেপে
ধরেছে। তিনি ও তাঁকে যারা মদদ দিয়েছেন, তাঁরা রোজিনা ইসলামের নয়, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করছেন।
বিক্ষুদ্ধ সাংবাদিকরা মানববন্ধনে করোনা প্রতিরোধ করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রত্যাহার করার দাবি জানান। স্বাস্থ্য বিভাগ এখন লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গলা চেপে ধরা অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগমকেও দ্রুত অপসারণের দাবি জানান। তা না হলে রুগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগের কারণে বাংলাদেশ করোনা থেকে মুক্ত হতে পারবে না। তাদের অপসারণ না হলে বাংলাদেশে করোনা রোধ সম্ভব নয়। বক্তারা অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছার সম্পদের পাহাড় গড়ার বিষয়ে মানবন্ধনে প্রশ্ন তোলেন। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ। তাঁর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সচিবালয় ঘেরাও করার আহবান জানান।
পরে সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে জড়ো হন। প্রেসক্লাবের এই কর্মসূচীর পরপরই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রেসক্লাবের সামনে রোজিনা ইসলামের ঘটনার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন