“আইপিএল মানেই ক্রিকেট জুয়া” সরাইলে গ্রামে গ্রামে চলছে।।
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ২:১১ পূর্বাহ্ণ , ২৭ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 2 years আগে
মো.তাসলিম উদ্দিন সরাইল( ব্রাহ্মণবাড়িয়া) জানাযায়, ২০১৫- ১৬ সালের দিকে সরাইলে প্রকাশ্যে আসে ক্রিকেট জুয়ার বিষয়টি। শুরুতে হাসি তামাশা দিয়ে শুরু হয় বাজি ধরা। এরপর তা ক্রমেই পেশাদার জুয়ায় রূপ নেয়। গত কয়েক বছরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে নিরক্ষর সব শ্রেণীর মানুষই এখন ক্রিকেট জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে।
সরাইল উপজেলার সদরসহ গ্রামে গ্রামে সর্বত্রই চলছে রমরমা ক্রিকেট জুয়া। আগে কেবল শহর এলাকায় ক্রিকেট জুয়ার বাজি ধরতে দেখা গেলেও এখন মহামারি আকারে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া যুবক বিদেশ ফেরতসহ সব শ্রেণীপেশার মানুষ। এমনকি যারা নিরক্ষর তারাই বাজি ধরছেন আইপিএল, বা কোন ক্রিকেট খেলায়। প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরছেন জুয়ারিরা। এই ক্রিকেট জুয়ার নেশায় পড়ে লাখ লাখ টাকা হারিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। তবে স্থানীয় ডিলারদের ছত্রছায়ায় এই জুয়ার বাজি হয় মোবাইল ফোনে। ফলে এই জুয়া চক্র থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সরাইল উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের দোকান ও মোড় থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম যেখানে ডিশের লাইন পৌঁছেছে সেখানেই এই জুয়ার দেখা মিলবে। আইপিএল, বিপিএলসহ যে কোন ক্রিকেট খেলা শুরু হলেই গ্রাম কিংবা মোড়ের চায়ের দোকানে টিভিতে খেলা দেখার ধুম পড়ে যায়। এদের অধিকাংশ ভাল করে ক্রিকেট সম্পর্কে জানেই না। কেবল জানে চার, ছক্কা ও আউট। বাজি ধরতে ধরতে তারা ক্রিকেট খেলা সম্পর্কে কিছুটা আয়ত্তও করেছে।
বর্তমানে ভারতে চলছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)। আইপিএল মানেই ক্রিকেট জুয়ারিদের ভরা মৌসুম। খেলা শুরু হলেই টিভির সামনে দেখা যায় জুয়াড়িদের আনাগোনা।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতি রাতে এই এলাকায় ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকার জুয়া চলে। ক্রিকেট জুয়ার পুরো ব্যবস্থায় থাকেন কয়েকজন বড় ডিলার। তারা দুই পক্ষের লোকজনের কাছে মোবাইলে অর্ডার নেয়। জুয়ায় বিজয়ীদের ঠিকমতো টাকাও পরিশোধ করে তারা। হাজারে ১০০ টাকা করে কমিশন নেয় এইসব ডিলার।
জানা যায়, পর্দার পেছনে থেকে তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এসব ডিলারদের কেউ কেউ এখন লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন। অপরদিকে জুয়া খেলে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেক বড় বড় ব্যবসায়ী। জুয়ার নেশায় নগদ টাকা থেকে শুরু করে, বাড়ির আসবাবপত্র, স্ত্রীর গহনা পর্যন্ত দিয়ে বাজি ধরছে জুয়ারিরা। জুয়ার সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে তাদের পরিবারের লোকজনও বিপাকে পড়েছেন। অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে পরিবারে। পুরো এলাকার মানুষের কাছে এখন জুয়া এক সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে।
এ ব্যপারে সরাইল থানা অফিসার ইনচার্জ এ এম এম নাজমুল আহমেদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে জুয়া খেলে তা শুনেছি তবে সঠিক তথ্য প্রমাণের অভাবে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না, তবে সরাইল থানার পুলিশ এই বিষয়ে সজাগ রয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন