এবার ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলের অনিয়ম
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ২:৪৪ পূর্বাহ্ণ , ১৩ মে ২০২০, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
করোনায় গরীব ও অসহায়দের জন্য সরকার যেই বিশেষ ওএমএস সুবিধা চালু করেছে সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের (ভাদুঘর) তালিকায় ভাগ বসিয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা।
অভিযোগ আছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মাধ্যমে দেওয়া এই সরকারি সু্বিধায় ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সেলর রফিকুল ইসলাম নেহার গরীব ও অসহায়দের তালিকা তৈরি করার সময় স্বজনপ্রীতি করেছেন। ফলে একাধিক ওএমএস এর কার্ড দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক নেতা,সামর্থ্যবান ব্যক্তি ও নিজের আপন লোকদের। ওএমএস কার্ডধারীরা প্রতি মাসে ১০ টাকা কেজি দরে ২০ কেজি চাল পাবেন।অনুসন্ধানে জানা যায়, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকায় ১৯ নম্বর ক্রমিক নম্বরে আছে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদের নাম।
৪১৯ নম্বরে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব ভূইয়া।
অথচ এই দুজনই তালিকা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য হয়েও তারা তাদের নিজেদের নাম ঢুকিয়েছেন এই তালিকায়।
২৯ নম্বরে কাউন্সেলরের আপন ভাই তাহের মিয়া, তার ছেলে বিদেশ থাকে। ১১৯ নম্বরে নাম আছে তাহেরের মেয়ে মুক্তা বেগমের, তিনি কাউন্সেলরের আপন ভাই তাহেরের স্ত্রী।
৩০ নম্বরে কাউন্সেলরের আপন ভাই জাহের মিয়া,তার ছেলে পুলিশে চাকরি করে।
৩১ নম্বরে কাউন্সেলরের চাচাতো ভাই আশরাফুল আলম,তার ফার্মেসীর ব্যবসা।
৩৩ নম্বরে কাউন্সেলরের চাচাতো ভাই ফজলু মিয়া,যার ৩/৪ ছেলে বিদেশ থাকে। এই তালিকার ২৭ নম্বরে নাম আছে ফজলু মিয়ার স্ত্রী আছিয়া বেগমেরও।
৩৮ নম্বরে নকুল কুমার সাহা, যিনি একটি এমপিও ভুক্ত কলেজের শিক্ষক। তার বাড়িতে বিল্ডিং ঘর।
৫৩ নম্বরে কাউন্সেলরের চাচাতো ভাই আব্দুল আহাদ।
৫৪ নম্বরে কাউন্সেলরের চাচাতো ভাই আপেল মাহমুদ।
৬৬ নম্বরে শামীম মিয়া, তিনি আর্থিক ভাবে সচ্ছল ও তার ২০/২৫ টি মহিষ আছে
৭৩ নম্বরে শেখ জুয়েল আহমেদ। যিনি আর্থিক ভাবে সচ্ছল ও তার বাড়িতে বিল্ডিং।
৯০ নম্বরে শিবির পাল, তিনি নিজেসহ তার পুরো পরিবার শিক্ষকতা পেশায় আছেন।
১২৫ নম্বরে এম এ মওলা। তিনি নিজেই বিভিন্ন সময় মানুষকে দান-খয়রাত করেন।
১৬৮ নম্বরে আনোয়ার হোসেন আনু। তিনি ধণী গিরস্ত।
১৪৬ নম্বরে মৃনাল কান্তি রায়, তিনি একজন চাকরিজীবী, বাবার পেনশন ছাড়াও বাড়িতে আছে দুতলা বিল্ডিং।
২১৩ নম্বরে হাসিবুর রহমান, তিনি আর্থিক ভাবে সচ্ছল। বাড়িতে বিল্ডিং।
৩৩১ নম্বরে আছেন কাউন্সেলরের বোন সাফিয়া খাতুন।
৩৩৭ নম্বরে হেলিলিম মিয়া, তার এক ছেলে আমেরিকা ও এক ছেলে ইউরোপ থাকেন। বাড়িতে বিল্ডিং।
৩৪১ নম্বরে শওকত, তিনি ডিস ব্যাবসায়ী।
১০০ থেকে ১০৪ নম্বর ক্রমিকের সবাই আর্থিক ভাবে সচ্ছল।
৩৩৮ নম্বরে হেনেরা বেগম। তার ৩ ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী ও আরেক ছেলে বিদ্যুৎ বিভাগে চাকরি করেন।
এছাড়াও ৩৬৭ ও ৪৬৮ ক্রমিক নম্বরে একই ব্যক্তিকে ২ বার নাম দেওয়া হয়েছে। তার নাম শুভ সাহা।
৪৯০ নম্বরে শওকত উসমান, ধান ব্যাবসায়ী। তার স্ত্রী পল্লি বিদ্যুতের একাউন্টেন্ট। বাড়িতে বিল্ডিং।
উপরের এই ব্যক্তিগুলোর বাড়ি ভাদুঘরের দাশ পাড়া,সাহা পাড়া,নোয়া পাড়া,খাদেম পাড়া ও এলহাম পাড়া।
তবে আলগা বাড়ি,দক্ষিণ পাড়া,ভূইয়া পাড়া, নাগর পাড়া ও নাসিরপুরে অনুসন্ধান চালালে এরকম আরো অসঙ্গতি ধরা পরবে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এবিষয়ে সরেজমিনে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (ভাদুঘর) গেলে একাধিক গরীব ও অসহায় ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি তেপান্তরকে বলেন, কাউন্সেলর এখানে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে অনেক সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে কার্ড দিয়েছেন। অথচ এলাকায় অনেক গরীব ব্যক্তি না খেয়ে মরছে।
এবিষয়ে ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সেলর রফিকুল ইসলাম নেহারের বক্তব্য জানার জন্য তার এলাকায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
সংগৃহীত তেপান্তর অনলাইন লিংক
আপনার মন্তব্য লিখুন