সু-স্বাগতম ফজিলতপূর্ণ ইবাদতের মাস মাহে রমজান
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৫:৫৭ অপরাহ্ণ , ২৪ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
স্টাফ রিপোর্টারঃ পাঁচটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তি। তার অন্যতম হচ্ছে রমজান মাসের রোজা। রমজান ও রোজাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলও সৃষ্টি হয়েছে।
রমজানের চাঁদ দেখা, রোজার নিয়তে ভোর রাতে সেহরি খাওয়া, সূর্যাস্তের পর পরই ইফতার করা, তারাবি, এতেকাফ, লাইলাতুল কদর, সদকাতুল ফিতর, ঈদুল ফিতর ইত্যাদি বাংলাদেশের জনমনে পরিচ্ছন্নতার সুরভি মেখে দেয়।
ইসলামি ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবনের কবি ফররুখ আহমদ তার শবে-কদর কবিতায় বলেছেন-
‘এখনো সে পুণ্য রাত্রি নামে পৃথিবীতে, কিন্তু প্রাণ
এক অন্ধকার ছেড়ে অন্য এক আঁধারে হারায়,
ঊর্ধ্বের ইঙ্গিত আসে লক্ষ মুখে, অজস্র ধারায়;
নর্দমার কীট শুধু পাপ-পঙ্কে খোঁজে পরিত্রাণ।
…. আত্মার প্রশান্তি গ্রাস করে ছায়া উদ্ভ্রান্ত মতের;
সে আজ দেখাতে রাহা এ সংশয়ে, … শবে কদরের
( কত অপলক দৃষ্টি জাগে আজও যে পথ-সন্ধানে);
জুলমাতের এলাকায় বলে দাও নিঃসঙ্গ খিজির।।’
রমজানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য
রমজান সব ভেদাভেদ ভুলিয়ে দেয়। সবাইকে কল্যাণকামী ও সহমর্মী করে তুলে। রমজান মুসলমানের ইবাদতের ভরা বসন্ত। মুমিন হৃদয়কে আলোড়িত ও আন্দোলিত করে রমজান। এর আবির ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। রমজান ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে দেয় নতুনমাত্রা। নতুনভাবে রাঙিয়ে নেয় ঈমানের রঙে- তারই হৃদয় ছোঁয়া বর্ণনা দেখি আমরা পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের তারাবি কবিতার ছত্রে ছত্রে।
রোজার উদ্দেশ্য শুধু অনাহারে থাকা নয়। পরন্তু দৈহিক ও মানসিক উভয়বিধ সংযম এবং সেই সংযমজনিত নিবৃত্তি ও প্রশান্তির স্নিগ্ধ পরিবেশে আল্লাহর দিকে মনের একাগ্রতা সাধনই ইসলামের নির্দেশিত রোজার মূল লক্ষ্য।
এ জন্যে এগুলোর দাহনের জন্যে এ দুনিয়ায় আল্লাহ সিয়ামের প্রবর্তন করেছেন। যাতে এ দাহনের ফলে মানুষ এ বিশ্বে তার প্রকৃত স্থান নির্দিষ্ট করতে পারে, সে যাতে আল্লাহর প্রতিনিধি বা Vice-gerent হিসেবে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে।’
রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস। রমজান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। রোজাদারকে সার্থকতা অর্জন করতে হলে কি কি করা উচিত সে সম্পর্কে ডক্টর আইয়ুব আলী বলেন- ‘সিয়ামের উদ্দেশ্যাবলী সার্থক করতে হলে সিয়াম পালনকারীকে প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও রিপুসমূহকে অন্যায় থেকে বিরত রাখতে হবে এবং ন্যায়ের অনুশীলন করতে হবে। সারাদিন হালাল দ্রব্য গ্রহণে বিরত থেকে ইফতারির সময় যদি অন্যায় ও অবৈধভাবে উপার্জিত খাদ্যাদির দ্বারা ইফতার করা হয়, তবে সওয়াবের পরিবর্তে আরও গুনাহর কাজ করা হল তা সাধারণ জ্ঞানেও বোঝা যায়।’
রমজান সর্বাধিক বরকতময় মাস। বহু ফজিলতপূর্ণ ইবাদতের এক মহা সমাবেশ ঘটেছে এই মাসে। এই মাসে শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, এই মাসে দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং বেহেশতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। এই মাসে মাগফেরাত লাভের অফুরন্ত সুযোগ আসে। এই সুযোগ লাভ থেকে আমরা যেন নিজেদেরকে বঞ্চিত না করি। আমাদের সবার জীবনে মাহে রমজান মোবারক হোক।
আপনার মন্তব্য লিখুন