করোনা সৃষ্ট প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র সংবাদকর্মীদের মূল্যায়নে প্রনোদনা না দেয়ার আক্ষেপ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৮:৫৭ অপরাহ্ণ , ১৭ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র সংবাদকর্মীদের মূল্যায়ন করেনি। তাদের জন্য নেই কোনো প্রণোদনা। নেই উৎসাহব্যঞ্জক অন্য কোনো কিছুও।
কিন্তু করোনাকালে সামনে থেকে তথ্যের জন্য নেতৃত্ব দিয়েছে সাংবাদিকরাই, আছেন এবং থাকবেন। করোনা মোকাবেলায় সব বার্তা, সরকারের নির্দেশনা, সচেনতামূলক পরামর্শ ও বিধিনিষেধ মানুষ গণমাধ্যম বা মিডিয়া থেকেই জানতে পেরেছে। প্রতিদিন আইইডিসিআরের ব্রিফিং সব গণমাধ্যম তুলে ধরছে। কোন হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা হয়, কোন নম্বরে কল করতে হবে- এগুলো গণমাধ্যমই তুলে ধরছে জাতীর সামনে।
স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিতদের উদ্দেশে সরকারের ঘোষণায় বলা হলো, ‘দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ বাড়বে। স্বাস্থ্যবীমা ও জীবনবীমা বাবদ বরাদ্দ ৭৫০ কোটি টাকা।’ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এমন প্রণোদনা ঘোষণা খুবই প্রশংসনীয়।
কিন্তু মিডিয়া কিংবা মিডিয়াকর্মীরা কী পেলেন? এই যে সরকারের এ ঘোষণা, এটাও তো গণমাধ্যমের মাধ্যমেই চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা জানতে পারলেন।
করোনায় গণমাধ্যমের অবদান রাষ্ট্র ছোট করে দেখছে বলে হয়তো এ পেশার কর্মীদের খানিকটা আক্ষেপ থাকবে, কিন্তু এ মহামারিকালে গণমাধ্যমকর্মীরা জরুরি তথ্যসেবায় পিছু হটবে না, শুধু তাদের মনে একটু কষ্ট থেকে যাবে। গণমাধ্যম এ সমাজ-রাষ্ট্রের সংকটে সবসময় ছিল, আছে এবং থাকবে।
যুগান্তর পত্রিকার সিটি রিপোর্টার বিল্লাল হোসেন সাগর বলেন, করোনার দুঃসময়ে পুলিশ ও ডাক্তার দের মত সাংবাদিকরাও জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। এরি মধ্যে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ১০ জন সাংবাদিক করোণায় আক্রান্ত হয়েছেন। ছোটখাটো গণমাধ্যমগুলো বকেয়া বেতন না দিয়েই বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। যার ফলে অনেক সাংবাদিক মানবেতর জীবন যাপন করছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সকল সেক্টরে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা করছেন তখন সাংবাদিকদের জন্য তিনি দিচ্ছেন ধন্যবাদ! একটি দেশের জনগণ যখন সঠিক কোন তথ্য না পায় তখন গুজবের সৃষ্টি হয়, আর গুজব থেকে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সরকারের উচিত হবে সাংবাদিকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বাতা সহ প্রনোদনা দেওয়ার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি মাঠে কাজের সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার সহাযতা করা।
আনন্দ টিভির নিউজ ইনচার্জ মিরন আহমেদ বলেন, “বর্তমান সরকার মিডিয়া বান্ধব সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই সব থেকে বেশি সাংবাদিকরা সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছে। তবে করোনা সংকট কালে মিডিয়া কর্মীরা সব থেকে বেশি ঝুকি ও দুঃসময়ে রয়েছেন। একদিকে কমে যাচ্ছে টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন টিভি মালিকরা। এতে কর্মীদের বেতন নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তাই এই সংকটকালে প্রত্যেক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক এবং সংশ্লিষ্টদের তালিকা প্রণয়ন করে বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা করলে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা হলেও মোকাবেলা করতে পারবে সব সাংবাদিকরা।”
স্বদেশ প্রতিদিনের সার্কুলেশন ম্যানেজার কাওছার আল হাবীব বলেন, সত্যিই সাংবাদকর্মীরা ভালো নেই, সংবাদপত্রের মালিকরা যেখানে তাদের অধিনস্থ সংবাদকর্মীদের প্রনাদোনা দেওয়া উচিত, সেখানে এই বিপদে অনেক প্রতিষ্ঠানই বেতন দেয়নি। আর সরকার কেন যে সংবাদকর্মীদের দিকে তাকাচ্ছে না সেটা বোধগম্য নহে।
(সংগৃহীত)
আপনার মন্তব্য লিখুন