নৈঃশব্দ্য নববর্ষ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৬:১০ অপরাহ্ণ , ১৪ এপ্রিল ২০২০, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মেহেদী হাসান মুকুট: কোথাও বাজানো হচ্ছেনা প্রিয় দুটি বৈশাখী গান “মেলায়যায়রে ও আইল আইল আইলরে।” এ যেন নৈঃশব্দ্য এক নববর্ষ। পুরো পৃথিবীসহ বাংলাদেশ এখন স্তম্ভিত। এইঘনবসতিপূর্ণ দেশে যেখানে করোনার কমিউনিটি সংক্রমণইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে সেখানে আসলে উৎসবের নামনেয়া ও যে বেমানান তার মাঝে রাস্তাঘাটে কোন মানুষনেই, ভীর নেই, কোলাহল নেই, পান্তা– ইলিশের ঘ্রাণ নেই, রবীন্দ্রনাথ নেই, লালন নেই, নজরুল নেই এমনকি নেইতাদের শীর্ষরাও। টিকে আছে অনেকেই আবার কেউবা ছেড়েছে দীর্ঘশ্বাস। বাচার আকুতি।
এবারের বৈশাখ কাটতে যাচ্ছে মিলনোৎসব ছাড়াই।বাঙ্গালীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ। তার মধ্যে চারদিকে হাহাকার, মৃত্যুভয়ে ঘ্রাস মানুষের অবুঝ মন, নীরবে কাতরাচ্ছে কারও অসুস্থ দেহ, উদ্বিগ্ন তাদের পরিজন। কেননা মৃত্যুর রেষ যে মানুষ থেকে পিছু হাটছে না গত তিনটি মাস। অদ্ভুত এক পরাশক্তির সাথে লড়াই করছে আদম সন্তান।
এরই মাঝে ১৪২৬ সালকে বিদায় জানিয়ে বাংলাবর্ষপঞ্জিতে আজ যুক্ত হলো নতুন একটি বছর ১৪২৭। গতবছর পহেলা বৈশাখের আগের দিন সারা দেশ বর্ণিলউৎসবে মেতে উঠলেও এবার নৈঃশব্দ্য নববর্ষ। ঘরে ঘরেআতংকের ছাপ। নেই কেনাকাটার উৎসব, নেই কোনোধুম, নেই কোন আমেজ, হৈ চৈ।
এক বছর আগের বর্ষবরণে গোটাদেশ ছিল উৎসবেভরপুর। রঙিন পোশাকে তরুণ–তরুণীর ঢল ছিল, রঙিনবেলুন হাতে অবাক বিস্ময়ে বাবার ঘাড়ে ছিল ছোট্ট শিশু, ছিল ভেঁপুর রকমারি শব্দ, ছিল হাওয়াই মিঠাই, ছিলসুরের মিছিল, ছিল রৌদ্রময় সকাল, ছিল প্রাণোচ্ছলমানুষের পদভারে কম্পিত বটমূল। বাশির সুরেলায় মোহিত ছিল নরনারীর প্রাণ। অথচ এক বছর বাদে আমাদেরনাগরিক বর্ষবরণের প্রাণকেন্দ্রে হয়নি কোন নতুন আলপনা। রমনীরা সাজবেনা বৈশাখী সাজ, পরবে নাহ বৈশাখী শাড়ি।
তবুও নতুন বছরের শুভেচ্ছা সেই সব মানুষকে, যাঁরাকরোনামুক্ত হয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছেন। সেই সবমানুষকে শুভেচ্ছা যাঁরা করোনাক্লান্ত পৃথিবীকে করোনামুক্তকরতে প্রাণান্ত পরিশ্রম করছেন প্রতিদিন।
শুভেচ্ছা সেই সব মানুষকে, যাঁরা আমাদের নিরাপদ রাখারআপ্রাণ চেষ্টায় ভুলে গেছেন পরিবার–স্বজনের কথা।হয়তবা আরেক বৈশাখের উৎসবে দেখা মিলবে আমাদের।এর মাঝে শান্ত হোক পৃথিবীপৃষ্ঠ। নরম হোক করোনার হৃদয়।
~ জানি রমনার বটমূলে হবেনা পদচারণ তবুও সবাইকে নববর্ষ এর শুভেচ্ছা ~
আপনার মন্তব্য লিখুন