সরাইলে নিম্নমানের কাজ করায় সংস্কারের পাঁচ দিনেই উঠে গেল সড়কের কার্পেটিং
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৮:৫৬ অপরাহ্ণ , ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে
মোঃ তাসলিম উদ্দিন, সরাইল প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রায় ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে এলজিইডির একটি সড়ক সংস্কারের পাঁচ দিন পরই কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে। নিম্নমানের কাজ করায় এমনটি হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে পুনরায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে সরাইল এলজিইডি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকী।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সরাইল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড্ডাপাড়া কবরস্থান সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই সড়ক হতে বণিকপাড়া রোড পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের জন্য রাজস্ব খাতের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২০ লাখ ৪৫ হাজার টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পেয়েছিল জেলার মেসার্স সিটি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গত বছরের জুন মাসে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কাজ শেষ করার মেয়াদ বাড়ানো হয়। আজ রবিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত পাঁচ দিন আগে ওই সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করতে সেদিন রাত ৮টা পর্যন্ত অন্ধকারের মধ্যে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হয়। নিম্নমানের কাজ করাকালীন সময়ে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দিলেও সরাইল এলজিইডি অফিসের এক উপ-সহকারি প্রকৌশলী বিষয়টি নানা বাহানায় পাশ কেটে যান। এ সড়কে এলজিইডি প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের লোকজন দরপত্রের নিয়মনীতি অমান্য করে দায়সারাভাবে সড়কের কার্পেটিং কাজ শেষ করে চলে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার দরপত্র অনুযায়ী সড়কের বেশিরভাগ স্থানে কার্পেটিংয়ের পুরুত্ব অনুসরণ করেননি। সংস্কারের দুইদিন পর থেকে অটোরিকশা ও সিএনজিসহ হালকা যানবাহন চলাচল শুরু করলে সড়কের কয়েকটি স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে নিচের অংশ বেড়িয়ে আসে।
মোঃ রোকন উদ্দিন, আবু মিয়াসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, দুই দিনে তড়িঘড়ি করে এই রাস্তা কার্পেটিং করা হয়। ঠিকাদার প্রভাব খাটিয়ে নিম্নমানের কাজ করায় পাঁচ দিনের মধ্যেই কার্পেটিং উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে সংস্কার কাজে অনিয়মের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোঃ এমদাদুল হক নাটকীয়তার আশ্রয় নিয়ে বলেন, আমি সড়কের কার্পেটিং কাজ করাই না। কাজটি করিয়েছেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকী। তিনি তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে লাইনটি কেটে দেন।
কিছুক্ষণ পর আবারো কল দিয়ে বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রকৌশলী এমদাদুল হক বলেন, সময় করে অফিসে আসেন। এ বিষয়ে কথা বলবো। এসব নিয়ে অযথা রিপোর্ট করে কোনো লাভ নাই।
সরাইল এলজিইডি’র পরামর্শে উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাক্কীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি সাইডে আছি। বিষয়টি ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। এ সড়কের যেখানে কার্পেটিং এর সমস্যা হয়েছে সেখানে পুনরায় কাজ করে দিতে হবে, নতুবা ফাইনাল বিল দেওয়া হবে না।
আপনার মন্তব্য লিখুন