৪ঠা জুন, ২০২৩ ইং | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

বাঞ্ছারামপুর পৌর কাউন্সিলর ও শ্রমিকলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১২:৪৩ অপরাহ্ণ , ২৯ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

বাঞ্ছারামপুর প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মডেল থানার নাম ভাঙ্গিয়ে পৌর কাউন্সিলর ও শ্রমিক লীগ নেতা সহ ৩ জন পরিবহন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশ নিজে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করায় অভিযুক্তরা গাঁ ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে গত (সোমবার) অসুস্থ রোগীসহ অটোরিকশা আটকে পুলিশের নামে পৌর কাউন্সিলরের নেতৃত্বে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার সকাল ৭টার দিকে বাঞ্ছারামপুর-মুরাদনগর সড়কের বাঞ্ছারামপুর উপজেলার শরিফপুর-ফতেপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই চাঁদাবাজির একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

থানা পুলিশ, অটোরিকশার চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ এলাকা থেকে গত সোমবার (২৩/১০/২০১৮) সকাল ৭টার দিকে একটি অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের দিকে আসছিল। অটোরিকশাটি বাঞ্ছারামপুর-মুরাদনগর সড়কের বাঞ্ছারামপুর উপজেলার শরিফপুর-ফতেপুর এলাকায় এলে হাত তুলে তাদের অটোরিকশাকে থামাতে বলেন বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অহিদ মিয়ার নেতৃত্বে সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা সেলিম মিয়া ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন।

অটোরিকশাটি থামানো হলে থানায় মাসিক চাঁদা হিসেবে অটোরিকশার চালক আল আমিনের কাছে ২০০ টাকা দাবি করেন অহিদ মিয়া ও সেলিম মিয়া। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে যাত্রী ও চালকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তারা। এ সময় ওই এলাকায় আরও ৬-৭টি অটোরিকশা থেকেও চাঁদা আদায় করেন তারা।

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, সেলিম মিয়া অটোরিকশা চালককে থানা পুলিশের কথা বলে মাসিক ২০০ টাকা দাবি করছেন। এ সময় চালক সেলিম মিয়াকে ১০০ টাকা দিলে তা ফেরত দিয়ে চালকের ওপর উত্তেজিত হন তিনি। পরে সোহাগ তালিব নামের এক যাত্রী ওই টাকা পুলিশ কীভাবে পায় তা জানতে চান তাদের কাছে। অহিদ মিয়া তাদের বলেন, রাস্তায় গাড়ি চালাতে হলে পুলিশকে টাকা দিতে হবে। পরে চালক আল আমিন ২০০ টাকা দিয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন। নেতাদের চাঁদাবাজির ভিডিওচিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেসবুকে দিলে দ্রুত তা ভাইরাল হয়। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

চালক আল আমিন বলেন, আমি একটি ট্রিপ নিয়ে সলিমগঞ্জ থেকে বাঞ্ছারামপুরের দিকে যাচ্ছিলাম। ফতেপুর ও শরিফপুরের মাঝে রাস্তায় আমাকে থামার সংকেত দেয় কয়েকজন। থামার পর আমার কাছ থেকে পুলিশের কথা বলে ২০০ টাকা চাঁদা চায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমি ১০০ টাকা দিলে তা ফেরত দেয় তারা। পরে একপর্যায়ে ২০০ টাকা দিয়েই এলাকা ত্যাগ করতে হয়েছে। টাকার জন্য আমাদের সঙ্গে তারা খারাপ ব্যবহার করেছে। আমরা তো এই এলাকার নই, তাই তাদের আমরা চিনতে পারিনি।

যাত্রী সোহাগ তালিব বলেন, আমি আমার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে অটোরিকশায় বাঞ্ছারামপুরে যাচ্ছিলাম। রাস্তাায় অটোরিকশা আটকে থানা পুলিশের কথা বলে ২০০ টাকা চাঁদা চায় অহিদ মিয়া, সেলিম মিয়াসহ কয়েকজন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরে বাধ্য হয়েই ২০০ টাকা তাদের দিয়েছে চালক। এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত।
অহিদ মিয়া বলেন, আমরা কোনো টাকা চাইনি বা নেইনি। উপজেলার মোড় এলাকার অটোরিকশার স্টেশন থেকে পুলিশ গাড়ি চায় রাতে ডিউটি করার জন্য। কিন্তু রাতে চালকরা মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখলে পুলিশ গাড়ি না পেয়ে আমাদের বলে, সে জন্যই আমরা গাড়িগুলো চেক করছিলাম। থানায় কেন গাড়ি দিচ্ছে না কিংবা টোকেন নিচ্ছে না এ বিষয়টি বলতে চেয়েছি।

বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি সালাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘‘একজন পৌরসভার কাউন্সিলর পুলিশের নাম করে চাঁদাবাজি করতে পারেন না। তিনি তার জন্য করতে পারেন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।আসামীরা যতোই ক্ষমতাশালী হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।পুলিশ তাদের খুজছে।’’

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

October 2018
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
আরও পড়ুন