৪ঠা জুন, ২০২৩ ইং | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

দেশের বড় কারিগরি সম্মেলন

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ , ১৮ আগস্ট ২০১৮, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে দরকার দক্ষ মানবসম্পদ। নেটওয়ার্ক প্রকৌশলের ক্ষেত্রেও দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা বাড়ছে দেশে। তাই এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসেন এ খাতের প্রকৌশলীরা। তারা দেশে একটি কমিউনিটি তৈরি করে নিজেদের মধ্য অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি নতুনদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয় বিডিনগ। নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ বা নগ হচ্ছে ইন্টারনেট ইঞ্জিনিয়ারদের একটি গ্লোবাল কমিউনিটি বা ফোরাম যাঁরা নিজেদের মধ্যে অপারেশনাল-বিষয়ক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময় করে। ফলে বিডিনগও অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের মতো নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ যেমন সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ (সেনগ), নর্থ আমেরিকান নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ (ন্যানগ), জাপান নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ (জেনগ), অস্ট্রেলিয়া নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ (অসনগ), এশিয়া প্যাসেফিক রিজিওনাল ইন্টারনেট কনফারেন্স অন অপারেশনাল টেকনোলজিসের (অ্যাপ্রিকট) সঙ্গে কাজ করে।
বিডিনগ (বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপ) বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সেক্টরে কর্মরত নেটওয়ার্ক অপারেটর ও প্রকৌশলীদের একটি সংগঠন ৷ এটির উদ্দেশ্য হচ্ছে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কর্মকাণ্ডগত অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রয়োগমূলক গবেষণা পরিচালনা, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মেধাবী বাংলাদেশিদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশে উন্নততর ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা। এটি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে, অলাভজনক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। বিডিনগ ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে একটি অলাভজনক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। এটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অধীনে পরিচালিত হয়।
বিডিনগ বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাব্বির বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে তৈরি হয় বিডিনগ। বিশ্বের অন্য দেশের প্রকৌশলীদের সঙ্গে তাল মেলাতে এবং দেশের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের এ উদ্যোগ। ইতিমধ্যে আমাদের উদ্যোগ সফলতা পেয়েছে। বিডিনগ ৯টি সম্মেলন আয়োজন করেছে। প্রতিবছর দুটি সম্মেলন আয়োজন করে বিডিনগ। একটি হয় ঢাকায় আরেকটি ঢাকার বাইরে।’

সেনগ সম্মেলনে কারিগরি প্রশিক্ষণে দেশ বিদেশের অনেক প্রকৌশলী অংশ নেন। ছবি: সংগৃহীত

সেনগ সম্মেলনে কারিগরি প্রশিক্ষণে দেশ বিদেশের অনেক প্রকৌশলী অংশ নেন। ছবি: সংগৃহীত
দেশে সেনগ ও বিডিনগ সম্মেলন
কারিগরি দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সে উন্নতির ধারা জানানোর একটি প্ল্যাটফর্ম বলা যায় কারিগরি সম্মেলনগুলোকে। সম্মেলনে নেটওয়ার্কিংয়ের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত জ্ঞানও আহরণ করার সুযোগ পান প্রকৌশলীরা।
বাংলাদেশে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপের (সেনগ) ৩২ তম সম্মেলন ২ আগস্ট থেকে শুরু হয়। একই সঙ্গে শুরু হয় বিডিনগ ৯ সম্মেলন। ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলে এ সম্মেলন। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে ৯ দিনের এই আয়োজন তিনটি ভাগে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ছিল সেনগ-৩২ ওয়ার্কশপ প্রোগ্রাম, সেনগ-৩২ টিউটোরিয়াল ও সেনগ-৩২ কনফারেন্স। সেনগ-৩২ টিউটোরিয়াল চলেছে ৫ দিন, এতে প্রায় ১৪০ জন অংশ নেন। বিভিন্ন দেশ থেকে ফেলোশিপ পান ৩০ জন। এই সম্মেলনে ৭০ জনের মতো বিদেশি প্রকৌশলী অংশ নেন।
২ থেকে ৬ আগস্ট ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার উদ্দেশ্য হলো, ইন্টারনেট খাতের সার্বিক উন্নয়নে দেশি ও বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি। রাউটিং, সিকিউরিটি ও ভার্চ্যুয়ালাইজেশন এই তিনটি বিষয়ে এবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ৭ থেকে ৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় সেনগ টিউটোরিয়াল। বিশ্বের ১৩টি দেশের প্রশিক্ষকেরা এতে অংশ নেন।
সম্মেলনের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি)। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি অ্যামবার আইটি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী আমিনুল হাকিম বলেন, ‘সেনগ সম্মেলন ২০০৫ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বছরে দুবার এটি অনুষ্ঠিত হয়। এবার ঢাকায় হচ্ছে এই সম্মেলন। সম্মেলনে ৩০০ জনের বেশি প্রকৌশলী অংশ নিয়েছেন।’
সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ‘পরস্পরের মধ্যে নেটওয়ার্কিং বাড়ানো এবং বৈশ্বিকভাবে আমাদের দক্ষতা উপস্থাপন করার সুযোগ পাওয়া যায় এমন সম্মেলন। বিভিন্ন গবেষণাপত্র তুলে ধরার যে সুযোগ এখানে আছে, তাতে তরুণ মেধাবীদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়।’
আমিনুল হাকিম বলেন, ‘আমাদের দেশের ইন্টারনেটের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোর উন্নতি করতে হলে এর সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের জ্ঞান ও পেশাদারত্ব বাড়াতে হবে। এ ধরনের প্রযুক্তি সম্মেলনের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এক্সপার্টরা একসঙ্গে তাঁদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। ফলে কয়েক বছর ধরে আমরা দেখছি, বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের ইন্টারনেট প্রকৌশলীদের স্কিল বাড়ছে।’
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেছেন, ২০১৬ সালে এপনিক-৪২ হওয়ার কথা ছিল ঢাকায়। সে সময় হোলি আর্টিজানে হামলার কারণে নিরাপত্তার সংকট দেখিয়ে আয়োজকেরা সম্মেলন শ্রীলঙ্কায় সরিয়ে নেয়। বাংলাদেশ ভাবমূর্তির সংকটে পড়ে। সেনগ সম্মেলনের মাধ্যমে কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

August 2018
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
আরও পড়ুন