আবারো যখন ইন্টারনেট বন্ধ হতে পারে!
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ , ৬ আগস্ট ২০১৮, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, কোনো পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় বা জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে ইন্টারনেট বন্ধের মত পদেক্ষেপও সরকার নিতে পারে। আমাকে বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতম সেক্রিফাইস করতেই হবে। এটি খুব সংগত কারণেই করতে হবে। রাষ্ট্র বাঁচাব না ফেইসবুক বাঁচাব? আমাকে অবশ্যই রাষ্ট্র বাঁচাতে হবে।
সোমবার (০৬ আগস্ট) ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ‘আইটিইউ বিটিআরসি এশিয়া-প্যাসিফিক রেগুলেটরস রাউন্ডটেবিল-২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মৃত্যুর গুজব ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফেইসবুকে আমাদের ফিল্টারিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফেইসবুক তার নিজের আমেরিকান আইন অনুযায়ী কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলে।
কোনো কন্টেন্ট বাদ দেওয়া বা অন্য বিষয়ে ফেইসবুককে শুধু অনুরোধ করা যায় জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা কেবল ফেইসবুককে অনুরোধ করতে পারি। ফেইসবুক তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী নিজেদের কাজগুলো করে থাকে। এখন ফেইসবুকের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। ফেইসবুক আমাদের সব কথা শোনে না, কিন্তু কিছু কথা শোনে।
এ কারণে টেলিকম বিভাগের মাধ্যমে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক। আমরা প্রত্যাশা করি এ প্রকল্প যদি শেষ করতে পারি তখন সম্পূর্ণভাবে আমরা আমাদের কন্টেন্ট ফিল্টারিং অথবা যে ধরনের বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করা দরকার সেগুলো করতে সক্ষম হব।
কবে নাগাদ এ প্রকল্প বাস্তবায়তি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এটি টেবিলে ছিল, এই প্রকল্পে অনেকে যুক্ত আছে সবাইকে মিলিয়ে এটি করতে হবে।
আগামী নির্বাচনের সময় বা কোনো ঘটনা ঘটলে আবারও ইন্টারনেট বন্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে মন্ত্রী বলেন, সবার আগে রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা এবং অন্য বিষয়গুলো অস্বীকার করার উপায় নেই। আবার যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যে পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে কিংবা জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে- তখন প্রযুক্তির দিকে তাকিয়ে থাকা- এটা কোনো অবস্থাতেই নয়। আমাকে বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষুদ্রতর সেক্রিফাইস করতেই হবে।
মোবাইল অপরেটরদের নিরীক্ষার বিষয়ে কোনো উদ্যেগ নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের ছাড় কোথাও দেওয়া হবে না, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত শনিবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে ঢাকায় তাণ্ডব চালানো হয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টা থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় সরকার।
এদিকে আগামী ৮ থেকে ১০ আগস্ট র্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার ১৮তম পলিসি এবং রেগুলেটরি ফোরাম। ওই তিন দিন থাকছে এ অঞ্চলের জন্য উচ্চপর্যায়ের টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংক্রান্ত নীতিমালা, রেগুলেটরি ইস্যু নিয়ে আলোচনা।
এছাড়া ২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের জন্য টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি সংক্রান্ত কৌশলপত্র প্রণয়নের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হবে। ডিজিটাল অর্থনীতিতে উদীয়মান প্রযুক্তির প্রবণতাসহ পলিসি, রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জ ও উদ্ভাবন বিষয়ে আলোকপাত করা হবে অনুষ্ঠানে।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) বিভিন্ন দেশের রেগুলেটর প্রধান, সংস্থা প্রধান, অপারেটর, টেলিকম ও আইসিটি এক্সপার্টসহ প্রায় ১৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নেবেন এতে।
আইটিইউ ও এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেলিকম সংস্থার (এপিটি) উদ্যোগে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও বিটিআরসির যৌথ আয়োজনে হচ্ছে টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের পাঁচ দিনের এই দুটি সম্মেলন।
আপনার মন্তব্য লিখুন