পিটিয়ে মানুষ মারার সংস্কৃতি বাংলার সংস্কৃতি নয়।
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ , ১৩ জুলাই ২০১৮, শুক্রবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
বাংলার সংস্কৃতি সমপ্রীতির, বাংলার সংস্কৃতি পরস্পর উপলব্ধির এখানে ধর্ম, বর্ণ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই সবার আপন। আমরা এই ‘আপনত্ব’ তত্ত্বের বাইরে গিয়ে তৈরি করছি ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ সামাজিক মঞ্চ, যেখানে মায়া কাননের চেয়ে রক্ত চক্ষুর দাপট বেশি, নমনীয়তার চেয়ে গর্জন বেশি। একটি সমাজ জীবনকে স্বাভাবিকতার কাঠামোয় আনতে হলে পারস্পরিক বিশ্বাস অপরিহার্য। কারণ, বিশ্বাসে বিশ্বাসে তৈরি হয় আবেগের সেই ঘনশ্যাম যেখানে একের নিঃশ্বাস অপরের ভরসা বা বিশ্বাস।
বর্তমানে বাংলার সামাজিক বন্ধন বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠী তারুণ্যকে ভিন্নপথে পরিচালিত করার সুযোগ সর্বোচ্চ মাত্রায় শক্তিশালী পরিক্রমায় ব্যবহার করছে। আমাদের দেশে যারা জঙ্গিগোষ্ঠীর মোহে নিজ সংস্কৃতি, সমাজ, মানুষের ওপর অমানবিক হয়েছে, সেইসব তারুণ্যের মনো-সামাজিক অবস্থা মানব বিদ্বেষী করার কাজ যারা করেছে তারা মানবতার শত্রু, মানুষরূপী দানব। মানবিকতার সংরক্ষণ ও পরিচর্যায় বাধা প্রদান করার জন্য এদের সর্বোচ্চ বিচার অপরিহার্য।
আমাদের দেশে সন্ত্রাস, খুন ও ধর্ষণের হার যেভাবে বাড়ছে এতে জাতির জন্য অত্যন্ত অশুভকর, একটি রাষ্ট্রিক যন্ত্রণা যা প্রতিনিয়ত আমাদের আতঙ্কিত করছে। আতঙ্কের এই বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সুস্থ রাজনীতির চর্চা সর্বব্যাপী যেমন প্রয়োজন তেমনি পারিবারিক জীবনে সমাজ প্রত্যাশিত সামাজিকীকরণের ব্যবহার প্রয়োজন। কারণ, বদলের রাস্তা প্রশস্ত হয় পরিবার থেকে, সমাজ বদলের যাত্রা শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই।
আমাদের দেশে বর্তমানে সামাজিক অস্থিরতা যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে মানবিক সম্পর্কের আয়োজন প্রতিনিয়ত ব্যাহত হবে। এই ব্যাহতকরণ নীতির বিরুদ্ধে সবার সংগ্রাম আনন্দচিত্তে মঞ্চস্থ হওয়ার সার্বিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আমাদের সমাজে আবেগ, মূল্যবোধ, মানবিক জয়ধ্বনি পচনের উদাহরণ আমরা প্রতিনিয়ত দেখি। কোনো একটি অন্যায় হলে তা উপভোগ করার জন্য একটি মানবচক্র পাওয়া যায়, কিন্তু সেই ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য মানবের সংখ্যা কম। আজকের পর্যায়ে মনে হয়, রক্ত ঝড়াতে আমরা ভালোবাসি, রক্তের শক্তিতে সম্পর্কের বন্ধনে বিশ্বাসী হতে আমাদের কষ্ট হয়। এ কথা নিশ্চয়তার সাথে বলা যায়, অন্যের বেদনায়/অন্যায়ে যারা প্রতিবাদ/প্রতিরোধ করা ভয় পায়, সেই সমাজের মানবিক পচন বহু পূর্বেই ধরেছে; এখন শুধু খসে পড়া বাকি।
আমাদের সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
আপনার মন্তব্য লিখুন