৪ঠা জুন, ২০২৩ ইং | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

লেবাননে মানসিক ভারসাম্যহীন মমতাজের দায়িত্ব নিলেন রাষ্ট্রদূত, চিকিৎসা হচ্ছে রফিক হারিরি হাসপাতালে

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ , ২১ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

লেবানন থেকে জহির রায়হান: লেবাননে বাংলাদেশি এক অসহায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারী মমতাজ খাতুন (৩৬) এর চিকিৎসা রফিক হারিরি হাসপাতালে শুরু হয়েছে। গত বুধবার (১৩ জুন) রফিক হারিরি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (৭ জুন) রিনা আক্তার নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি নারী মানসিক ভারসাম্যহীন মমতাজের অসুস্থতার কথা এই প্রতিবেদককে জানালে প্রতিবেদক বিষয়টি মান্যবর রাষ্ট্রদূতকে অবগত করেন। পরে গত বুধবার (১৩ জুন) রাষ্ট্রদূত তাঁকে রফিক হারিরি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন এবং তাঁর পুরো চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। চিকিৎসা বাবদ এতে আনুমানিক ব্যয় হবে প্রায় চার হাজার মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। আর এই সম্পূর্ণ টাকার দায়িত্ব নিয়েছেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের জননন্দিত প্রবাসীবান্ধব রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মানসিক ভারসাম্যহীন মমতাজ খাতুন ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার বানিয়াকান্দি গ্রামের মোঃ ডাবলু মিয়ার স্ত্রী। মমতাজ খাতুন জীবীকার তাগিদে ২০১৪ সালে গৃহপরিচারিকার কাজে লেবাননে পাড়ি জমান। গৃহকর্তার শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৫ সালের শেষের দিকে তিনি পালিয়ে অবৈধ হয়ে যান। অবৈধ হয়ে ঠিকঠাকভাবে কাজ করলেও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর স্বামী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, ফেব্রুয়ারিতে ২৫ বছর বয়সী একটি ছেলে মারা যায় এবং ঠিক ২০ দিনের মাথায় একটি বোনও মারা যায়। একসাথে এতগুলো আঘাত সহ্য করতে না পেরে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন।

মমতাজ খাতুন বর্তমানে রফিক হারিরি হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ২৫০৯ নাম্বার রুমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূতের তদারকি এবং চিকিৎকের সুচিকিৎসায় এখন তিনি কিছুটা সুস্থ আছেন।

মমতাজ খাতুনের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া টাইমসকে বলেন, রাষ্ট্রদূতের জন্যই তিনি আজ নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূতের এই সহযোগীতার কথা তিনি চিরদিন মনে রাখবেন। সেইসাথে রাষ্ট্রদূতের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন তিনি। পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশি নারী রিনা আক্তার, সামিরা এবং এই প্রতিবেদকের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পুরপুরি সুস্থতার জন্য তিনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মান্যবর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া টাইমসকে বলেন, এ দেশে যেসব অসহায় ও নিরুপায় প্রবাসীরা আছে অর্থাভাবে যাদের চিকিৎসা হয় না কিংবা করাতে পারে না। আমরা সর্বদাই তাদেরকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। একইভাবে আমাদের কাছে যখন এই মানসিক রোগীটির কথা বলা হয় তখন আমরা তাকে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে এবং বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ করি। পরিশেষে আমরা তাকে রফিক হারিরি হাসপাতালে ভর্তি করাতে সক্ষম হই।

তিনি বলেন, আসলে এই ধরনের রোগীর চিকিৎসা বাংলাদেশে যেমন ব্যয়বহুল তেমনি লেবাননে আরো বেশি ব্যয়বহুল। আমরা আশা করছি যে, পূর্ণ চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং সুস্থ হওয়ার পর আমরা তাকে বাংলাদেশে তার পরিবার পরিজনের কাছে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এই একজন মানসিক রোগী ছাড়াও গত দুই বছরে আরো ৫/৭টি রোগীর চিকিৎসা সেবা আমরা প্রদান করেছি। এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন যখনই কেউ হয় তখন যেন অনতিবিলম্বে দূতাবাসে যোগাযোগ করেন। আমরা সবসময়-ই এই ধরনের অসহায় প্রবাসী বাংলাদেশি রোগীদের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

June 2018
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  
আরও পড়ুন