লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:২২ পূর্বাহ্ণ , ১৮ এপ্রিল ২০১৮, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
জহির রায়হান, লেবানন থেকে: যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে লেবাননে বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন করেছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ঐতিহাসিক এ দিবসটি পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে দূতাবাস হলরুমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার। এ সময় ইউনিফিলে নিযুক্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তাগন, কমিউনিটির সদস্য, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে দর্শকশ্রোতাদের উপস্থিতির একাংশ।
পরে দূতাবাসের কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান জনাব সায়েম আহমেদের সঞ্চালনায় দিবসটি উপলক্ষে দূতাবাস হল রুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত এবং দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির প্রেরিত বাণী যথাক্রমে পাঠ করে শুনানো হয়।
পরে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে মুজিবনগর দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন ও ১৭ এপ্রিল সেই সরকারের আত্মপ্রকাশের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। তিনি ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকারের জাতীয় চার নেতাসহ সকল সদস্যদের ভূমিকার কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে আরো উল্লেখ করেন মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা।
তিনি বলেন, সেদিন মুজিবনগর সরকারকে অস্থায়ী সরকার বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে সেটিই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের (আনুষ্ঠানিক সরকার) প্রথম সরকার। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীনকে প্রধানমন্ত্রী করে আর ৩জন মন্ত্রী নিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছিল। মন্ত্রীসভায় সদস্য সংখ্যা কম থাকায় সেখানে বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক করে মেজর জিয়াউর রহমানসহ অন্যান্যদের মাঝে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। এরই ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এই দেশ স্বাধীন হয়। এজন্যই বাংলাদেশের ইতিহাসে মুজিবনগর দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। ঐতিহাসিক এই মুজিবনগর দিবসের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে লেবাননে অবস্থানরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে তিনি অনুরোধ করেন।
বক্তব্য শেষে রফিক হারিরি স্টেডিয়ামের বিপরীতে ইউনেস্কোর অফিসের পাশে জিব্রান এন্ড্রউস টুয়েনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে আগামী রোববার (২২ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় দূতাবাসের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার কথা জানিয়ে উক্ত অনুষ্ঠানে লেবাননে সকল প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে আহ্বান করেন। অনুষ্ঠানে যারা রকমারি স্টল বসাতে ইচ্ছুক এবং কৌতুক, গান, নাটক, কবিতা আবৃতি করতে ইচ্ছুক অংশগ্রহণকারীদের নাম দূতাবাসে লিপিবদ্ধ করতে বলেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন