লেবাননে স্বাধীনতা দিবসের কূটনৈতিক রিসেপশন অনুষ্ঠিত
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৬:৫৫ অপরাহ্ণ , ২৮ মার্চ ২০১৮, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
লেবানন থেকে জহির রায়হান: লেবাননের রাজধানী বৈরুতের অভিজাত হোটেল ফিনিসিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার ২৭ মার্চ ২০১৮ বাংলাদেশের ৪৮তম মহান স্বাধীনতা দিবসের কূটনৈতিক রিসেপশন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার এবং তার সহধর্মিনী সাদিয়া ফেরদৌস সরকারের আমন্ত্রণে লেবাননের এমপি-মন্ত্রী, কুটনৈতিক, ব্যবসায়ী, মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিসহ সরকারি ও বেসরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ এতে অংশ গ্রহন করেন। এ সময় ২ শতাধিক লোকের সমাগম হয়।

আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের উপস্থিতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লেবাননের রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়াকুব শাররাফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লেবাননের জাতীয় সংসদের স্পীকার এবং লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি এমপি বাসেম আল সাব। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল প্রধান মিস নাজলা রিয়েচী আসকার।
এছাড়াও লেবাননে অবস্থিত ৫০টির অধিক দেশের দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, লেবানিজ ব্যবসায়ীসহ বিদেশী ব্যবসায়ী বৃন্দ ও সাংস্কৃতিকমনা ব্যক্তিবর্গ সহ লেবাননের জল সিমানায় শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহীনির প্রতিনিধি দল, দেশী ও বিদেশী ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ, বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ এবং প্রবাসী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ইউনিফলে নিযুক্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিনিধি দল।
অনুষ্ঠানের শুরুর পূর্বে হলের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে অতিথিবৃন্দদের স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার ও তার সহধর্মিনী সাদিয়া ফেরদৌস সরকার।
মূল অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দূতালয় প্রধান কাউন্সেলর সায়েম আহমেদ। লেবাননের নিয়মানুযায়ী শুরুতে লেবাননের জাতীয় সংগীতের বাদ্য বাজানো হয় এবং পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের বাদ্য বাজানো হয়। এ সময় এক আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
পরে রাষ্ট্রদূত শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, বক্তব্য শেষে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কেক কাটা হয়।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে কেক কাটা হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার কথা তুলে ধরেন। তিনি তার বক্তব্যে দারিদ্র বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী উন্নয়ন ও তথ্য প্রযুক্তিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে অর্জিত সাফল্য তুলে ধরেন। অতঃপর তিনি বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে লেবানিজ ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান।
রাষ্ট্রদূত তুলে ধরেছেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া আরাকানের রোহিঙ্গাদের কথাও। তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত এক মিলিয়নের বেশি মায়নমার নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার জন্য সকল কুটনৈতিকদের ধন্যবাদ জানান এবং পাশা পাশি রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ন সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের সহযোগীতা অব্যহত রাখার অনুরোধ করেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখছেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার।
লেবাননের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৮ সাল হচ্ছে লেবানন বাংলাদেশ কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪৫ তম বার্ষিকী। আর এই ৪৫-তম বার্ষিকী অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালনের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। এ বিষয়ে লেবানন সরকারের সহযোগীতা চেয়েছেন রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার।

দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দদের গ্রুপ ছবি।
বাংলাদেশ কমিউনিটির সাংবাদিকদের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আগামী এপ্রিল মাসে ১৫-২০ সদস্যের একটি লেবানিস বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী দল বাংলাদেশে প্রেরণ করতে যাচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং বানিজ্যের যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে সেটি উন্মোচিত হবে। বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীদের এই সফর সফল হলে আগামীতে আরো বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নৈশভোজের বাহারি রেসেপি।
সবশেষে নৈশভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে।
আপনার মন্তব্য লিখুন