৪ঠা জুন, ২০২৩ ইং | ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

EN

লেবাননে বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৭:৩০ পূর্বাহ্ণ , ২৭ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে

লেবানন থেকে জহির রায়হান : যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে জাতীয় সংগীতের সুরের মূর্ছনার মধ্য দিয়েই লেবাননের রাজধানী বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়। সোমবার (২৬ মার্চ) স্থানীয় সময় ভোর ৫ টায় এবং বাংলাদেশ সময় সকাল ৮ টায় লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের হল রুমে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ইউনিফিলে নিযুক্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যবৃন্দ ও লেবাননে বসবাসকারী বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে একযোগে গেয়ে উঠেন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত চর্চাকে অনুপ্রাণিত করতে দূতাবাস এ উদ্যোগ গ্রহণ করে। আর এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন উপস্থিত প্রবাসীরাও।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে সমাবেত কণ্ঠে একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন।

এরপর মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকাল ৬ টায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের সময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ীক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিকালে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য আবারও সকলকে আহ্বান করেন।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছেন রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিকাল ৫ টায় দূতাবাস হল রুমে দিবসটি উপলক্ষে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার পূর্বে কনস্যুলার সেবা সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রদূত স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে এক মতবিনিময় সভা করেন। উক্ত মতবিনিময় সভায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের সুখ-দুঃখের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

প্রথমেই পবিত্র কুরআন তেলোওয়াতের মধ্য দিয়ে উক্ত আলোচনা সভার অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের উন্নয়ন ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতি।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব, দূতালয় প্রধান (কাউন্সেলর) সায়েম আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুল হোসেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন সহকারী কনস্যুলার কর্মকর্তা তাছলিমা সুলতানা এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান দূতাবাসের কল্যাণ সহকারী কর্মকর্তা আরমান প্রধান।

মাননীয় রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করছেন দূতালয় প্রধান (কাউন্সেলর) সায়েম আহমেদ।

দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান (কাউন্সেলর) সায়েম আহমেদ এর সঞ্চালনায় দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের উপর অনুষ্ঠিত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অপরিসীম অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। ৩০ লক্ষাধিক শহীদদের আত্মত্যাগ এবং ২ লক্ষাধিক মা ও বোনের সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা তিনি বিনম্ভ্র শ্রদ্ধাসহকারে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, আজ এইদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনটি আমাদের আত্মপরিচয় ও আত্ম উপলব্ধির দিন। স্বাধীনতার এই ৪৮তম বছরে এসে আমাদের আজ সময় এসেছে নিজেদেরকে মূল্যায়ন করা। বিগত এই দিনগুলোতে আমরা কি পেয়েছি না পেয়েছি তা হিসেব করে আগামীর দিনগুলোতে সামনে এগিয়ে চলার নতুন পথ বের করতে হবে।

তিঁনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম না হলেও তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষে দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের বিষয়।

এ সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনসহ দশটি মেঘা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিঁনি বলেন, আজ আমরা খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ, চিকিৎসা খাতেও আমাদের কোন কমতি নেই। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে অনুরোধ করেন তিঁনি। এ সময় উপস্থিত সবাইকে কনস্যুলার সেবা সপ্তাহ-২০১৮ এবং ৪৮ তম মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

সবশেষে নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

March 2018
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
আরও পড়ুন