লেবাননে দালাল বিরোধী আন্দোলন বনাম সুযোগ সন্ধানীরা!
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১২:৫৫ অপরাহ্ণ , ৮ মার্চ ২০১৮, বৃহস্পতিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগে
মুক্ত কলাম : লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার অভিবাসন ব্যয় কমাতে বিভিন্ন সভা, সেমিনারে দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। শুধু তাই নয় দালালদের বিরুদ্ধে রীতিমত ‘জিরু টলারেন্স’ নীতিমালাও গ্রহণ করেছেন। গ্রামের সহজ-সরল, মধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্র সাধারণ পরিবারের চিন্তা মাথায় রেখেই তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে পারলেই লেবাননে অভিবাসন ব্যয় অনেক কমে যাবে। আর এজন্যই তিনি জিরু টলারেন্সের মাধ্যমে দালালদের উৎপাত সমূলে নির্মূল করতে চাইছেন।
বলা যায় এ উদ্যোগে তিনি অনেকটাই সফল হয়েছেন। কেননা, জিরু টলারেন্সের নীতিমালা গ্রহণ করার পর বড় বড় রাঘব বোয়াল অনেক দালালই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অনেকেই আবার তাদের দালালী ব্যবসা ছেড়ে আট দশটা সাধারণ প্রবাসীদের মত কাজ কর্মে মনযোগী হয়েছেন।
কিন্তু রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে দালাল বিরোধী স্লোগান দিয়ে চুনোপুঁটিরাও যে সুযোগ নিচ্ছে তা বলার আর অবকাশ রাখে না। বিষয়টা এমন যে, একটি গ্রামে ডাকাত পড়ল, সে খবর শুনে পুরো গ্রামবাসী ডাকাত ডাকাত বলে হৈচৈ শুরু করলো। সাথে ডাকাতদলও নিজেদের রক্ষার্থে ডাকাত ডাকাত বলে চেঁচামেঁচি শুরু করে দিল। ঠিক এমনিভাবে সুযোগ সন্ধানী চুনোপুঁটি দালালরাও পুরো লেবানন চষে বেড়াচ্ছে। যে খবর কেউ রাখে না!
আবার এমনও শোনা যায়, রাষ্ট্রদূতের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ প্রবাসীদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কেউ কেউ নিজেদের ফায়দা লুটছে। বেশ কয়েকটা সভা, সেমিনারে রাষ্ট্রদূত আব্দুল মোতালেব সরকার এ কথাগুলো নিজেই বলেছেন। ঐ সকল ব্যক্তিদের সতর্কও করেছেন এবং সেইসাথে তাদেরকে চিহ্নিত করে দূতাবাসকে অভিহিত করতে সকল প্রবাসীর কাছে সহযোগীতা চেয়েছেন।
“দালালদের দৌরাত্ম্য কমাতে পারলে লেবাননে অভিবাসন ব্যয় কমবে” এবং দালাল বিরোধী আন্দোলন ও সংগ্রামের মাধ্যমে দালাল নির্মূলে মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহোদয় “জিরু টলারেন্সের” যে নীতিমালা গ্রহণ করেছেন আমি তাঁকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, বড় রাঘব বোয়াল যে দালালরা রয়েছেন তারা তো বাংলাদেশ থেকে সরাসরিভাবে লোক আনছেন না। এদেশে যে চুনোপুঁটি দালাল রয়েছে তাদের মাধ্যমেই লোকগুলো আনছেন। কিন্তু পান থেকে চুন খসলেই (তাদের স্বার্থে আঘাত লাগলে) এরাই আবার দালালদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
এ প্রসঙ্গে আমি বলবো, এই চুনোপুঁটি দালালরাই প্রকৃত দালাল। আগে এদেরকে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এই চুনোপুঁটি দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে পারলেই বড় রাঘব বোয়াল যে দালালরা রয়েছে তারা বাধ্য হয়েই বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সির শরণাপন্ন হবে। তখন অতিরিক্ত টাকা আদায় করা তো দূরের কথা এদেশে আসার লোকই খুঁজে পাবে না।
অতএব, মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহোদয়কে আমি অনুরোধ করবো উপরোক্ত কথাগুলোর উপর বিবেচনা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলে লেবাননে বসবাসরত সাধারণ প্রবাসীরা দালাল নামক ঘৃণিত প্রাণীদের থেকে পরিত্রাণ পাবে।
দ্রষ্টব্য : দশজনের একজন হয়ে এখানে আমি আমার স্বাধীন মত প্রকাশ করেছি, বিদ্বেষী হয়ে নয়।
লেখক : জহির রায়হান।
সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী।
ক্যাটাগরি : মুক্ত কলাম।
নির্বাহী সম্পাদক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া টাইমস ডটকম।
www.brahmanbariatimes.com
আপনার মন্তব্য লিখুন