ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির মূল হোতা নাভিদ ও এনামুল কে আটক করেছে সিআইডি
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১:৫৬ পূর্বাহ্ণ , ২২ নভেম্বর ২০১৭, বুধবার , পোষ্ট করা হয়েছে 5 years আগেঅতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনার অন্যতম মূল হোতা নাভিদ আনজুম তনয় (২৪) এবং এনামুল হক আকাশ (১৯) এবং ( জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাবিতে ভর্তি হওয়া সাত শিক্ষার্থীকে আটক করেছে সিআইডি ) মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়েছে ।
এঁদের মধ্যে নাভিদ আনজুম তনয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। অন্যদিকে এনামুল হক আকাশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
মিনহাজুল বলেন, তনয় ও আকাশ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে বাইরে থেকে উত্তর বলে দিয়ে এবং পরীক্ষার দিন সকালে কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছিলেন।
মিনহাজুল আরো বলেন, এর আগে গত ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অমর একুশে হল ও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে অভিযান চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মহীউদ্দিন রানা ও আবদুল্লাহ আল মামুনকে আটক করে সিআইডি। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করে সিআইডি। আদালতে এই দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহ এবং প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার মূল হোতা হিসেবে নাভিদ আনজুম তনয়ের নাম আসে। এ ছাড়া ওই চক্রের আরো বেশ কয়েক সদস্যের নামও জানা যায় স্বীকারোক্তিতে। উক্ত স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে গত ১ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁও থেকে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিকে আটক করা হয়। নাফির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩ নভেম্বর আটক করা হয় চক্রের আরেক হোতা আনিনকে।খবর পেয়ে গা ঢাকা দেয় তনয়। এরপর প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৪ নভেম্বর রংপুরের কামাল কাছনা বাজার এলাকা থেকে তনয়কে আটক করে সিআইডি। এরপর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে ডিজিটাল জালিয়াতির তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে।তনয়ের বরাত দিয়ে মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৫ সাল এবং ২০১৬ সালে টাকার বিনিময়ে ডিজিটাল ডিভাইস এবং পরীক্ষার আগে কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে অবৈধ উপায়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সহায়তা করেছে। তনয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয় অর্গানাইজড ক্রাইম, সিআইডি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে প্রক্টোরিয়াল টিমের সহায়তায় অবৈধ উপায়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাতজনকে আটক হয়।আটককৃতরা হলেন তানভীর আহমেদ মল্লিক, মো. বায়েজিদ, নাহিদ ইফতেখার, ফারদিন আহমেদ সাব্বির, প্রসেনজিৎ দাস, রিফাত হোসাইন ও আজিজুল হাকিম। আটককৃত শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মিনহাজুল বলেন, আটক ব্যক্তিরা ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিনব সব উপায়ের কথা সিআইডিকে জানিয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘সব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন, সিনিয়র সরকারী পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম এবং সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাসের যৌথ নেতৃত্বে এ ঘটনায় জড়িতদের আটকে অনুসন্ধান ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে সিআইডি।
আপনার মন্তব্য লিখুন